শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের (আইসিসি) দেওয়া সেই গ্রেফতারি পরোয়ানাই থমকে দিল ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিদেশ সফর। রোববার ভ্যাটিকানে পোপ লিও চতুর্দশ-এর অভিষেক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু গ্রেফতার আতঙ্কে সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করেছেন তিনি।
তাসনিম নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইলি সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে—আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে ভ্যাটিকান সফর করলে সেখানে তাকে গ্রেফতার করার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। আর সেই আশঙ্কার কারণেই শেষ মুহূর্তে সফর বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন নেতানিয়াহু।
খবরে আরও বলা হয়, গত কয়েকদিন ধরে নেতানিয়াহুর দপ্তর ইতালি ও ভ্যাটিকানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে চেয়েছিল—এই সফরে গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করা হবে কি না। কিন্তু আশ্বস্ত করার মতো কোনো নিশ্চয়তা মেলেনি।
২০২৪ সালের ২১ নভেম্বর গাজা উপত্যকায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আইসিসি নেতানিয়াহু ও তৎকালীন ইসরাইলি যুদ্ধমন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
আইসিসির বিবৃতিতে বলা হয়—‘ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে এবং পরিকল্পিতভাবে বেসামরিক মানুষের ওপর হামলা চালিয়ে তারা যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করেছেন।’ একইসঙ্গে আদালত উল্লেখ করে—‘এই অপরাধে তারা শুধু নির্দেশদাতা নন, বরং সহ-অপরাধী হিসেবেও দায়ী।’
এদিকে, দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর আগ্রাসন এখনও অব্যাহত গাজা উপত্যকায়। গত ২৪ ঘণ্টায় নিহত হয়েছেন আরও ১২৫ জন ফিলিস্তিনি। তাদের মধ্যে ৩৬ জনকে হত্যা করা হয়েছে দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসিরের তথাকথিত ‘নিরাপদ জোনে’।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে—এখন পর্যন্ত ইসরাইলের হামলায় ৫৩,৩৩৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১ লাখ ২১ হাজার।
তবে সরকারি মিডিয়া অফিস বলছে—মৃতের প্রকৃত সংখ্যা ৬১,৭০০ ছাড়িয়েছে। কারণ ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও হাজারো মানুষ নিখোঁজ, যাদের সবাইকেই মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।